সংবাদ পরিক্রমা
- ইউক্রেনে ইউরোপন্থী বিক্ষোভ থেকে দাঙ্গাঃ ২৬ নিহত, সাময়িক হিংসা-বিরতিতে সম্মতি
ইউকেবেঙ্গলি - ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, বুধবারঃ পূর্ব ইউরোপের ইউক্রেনে ইউরোপন্থীদের চলমান সরকার-বিরোধী বিক্ষোভ দাঙ্গায় রূপ নিয়ে ১০ জন পুলিস-সহ অন্ততঃ ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটিয়েছে। আজ দেশটির স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্তৃপক্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে এ-সংবাদ জানিয়েছে প্রায় সকল গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংবাদ-মাধ্যম। আজ সন্ধ্যায় প্রাপ্ত শেষ খবরে জানা গিয়েছে সরকারের সাথে বিরোধী নেতারা অস্থায়ী একটি সহিংসতা-বিরতিতে সম্মত হয়েছেন।
ইউক্রেনের বর্তমান অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে দেশটির উপর প্রভাব বিস্তার করা নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও রাশিয়ার মধ্যকার সম্ভাব্য দ্বন্দ্বকে দায়ী করছেন অনেক বিশ্লেষক। প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ইউক্রেন কি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে ঘনিষ্টতা বাড়াবে, না-কি ভৌগলিক-ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক প্রতিবেশি রাশিয়ার সাথে সম্পর্কোন্নয়ন করবে - এ-বিতর্ককে কেন্দ্র করেই মূলতঃ দেশটির জনগণের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
গত নভেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ যখন আশা করছিলেন, অর্থ-সহায়তার জন্য তাদের সাথে বাণিজ্য চুক্তিতে সম্মত হবে ইউক্রেন তখন প্রেসিডেণ্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ রাশিয়ার কাছ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলারের অর্থ-সাহায্য গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। এর বিরোধীতায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন-পন্থীরা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে শুরু করে।
শুরুতে শান্তিপূর্ণ থাকলেও ক্রমাগত এ-বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে। গত দু'দিনে রাজধানী কিয়েভের স্বাধীনতা চত্বরের বিক্ষোভ রীতিমতো যুদ্ধে পরিণত হয়। বিভিন্ন ছবিতে দেখা গিয়েছে, সরকার-বিরোধীরা পুলিসের দিকে ইট-পাটকেল ছোঁড়ার সাথে-সাথে পেট্রোল বোমা, পিস্তল ইত্যাদি ব্যবহার করতে শুরু করে। বিপরীতে পুলিসও 'যথেচ্ছ বলপ্রয়োগ করেছে' বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
তবে সহিংসতা বন্ধে উভয় পক্ষের সদিচ্ছার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে আজ সন্ধ্যায়। ইউক্রেনের সরকার-বিরোধী কয়েকটি দলের নেতারা আজ প্রেসিডেণ্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁর প্রেস অফিস জানিয়েছে, "সভায় সকল পক্ষ সাময়িক শান্তি প্রতিষ্ঠা ও রক্তপাত বন্ধে আলোচনা শুরু করতে সম্মতি জানিয়েছে।" সহিংসতায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রেসিডেণ্ট ভিক্টর আগামীকাল বৃহস্পতিবারকে শোকদিবস হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে। ইউক্রেনের ২০ জন জেষ্ঠ্য সরকারী কর্মকর্তাকে সহিংসতার জন্য দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে ভিসা-নিয়ন্ত্রন আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। এতেও কাজ না হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে যৌথভাবে আরও কঠোর ব্যবস্থার হুমকি দিয়েছে দেশটি।
অন্যদিকে ইউরো-মার্কিন সামরিক জোট ন্যাটোও আজ প্রকাশ্যে বিক্ষোভকারীদের পক্ষাবলম্বন করে বক্তব্য দিয়েছে। সংস্থাটির মহাসচিব অঁদ্রে রাসমুশেন বলেছেন, "ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ করলে ন্যাটোর সাথে তাদের সম্পর্কের ব্যাপক হানি ঘটবে।"
আপনার মন্তব্য
সম্পর্কিত অন্যান্য
- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফী-বৃদ্ধি-বিরোধী বিক্ষোভে পুলিশ-ছাত্রলীগের গুলিবর্ষণঃ দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত
- ইউক্রেনে সরকার-বিরোধীরা পশ্চিমা সাহায্য চায়ঃ 'জনগণের পাশে' থাকবে যুক্তরাষ্ট্র
- বাংলাদেশে শিল্প -পুলিসের গুলিতে শ্রমিক নিহতঃ সাভার-গাজীপুরে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ
- বাংলাদেশে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ২ লাখ পোশাক-শ্রমিকের বিক্ষোভঃ পুলিসের সাথে সংঘর্ষে আহত ১৫০
- তুরষ্কে পরিবেশবাদী আন্দোলন থেকে সরকার-বিরোধী আন্দোলনঃ কেন্দ্রস্থল তাক্সিম স্কোয়ার