সংবাদ পরিক্রমা
- জার্মানীতে ডবল-এজেণ্ট গ্রেফতারিতঃ বার্লিনে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের তলব
ইউকেবেঙ্গলি - ৪ জুলাই, ২০১৪, শুক্রবারঃ জার্মানীর গুপ্তচর সংস্থা বিএনডি'র একজন কর্মী গ্রেফতারিত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কাজ করার অভিযোগে। আজ দু'জন জার্মান সাংসদের বরাতে এ-সংবাদ জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। বার্লিনের মার্কিন দূতাবাস ও ওয়াশিংটনের পররাষ্ট্র দপ্তর উভয়ই এ-প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
চ্যান্সেলর এ্যাঙ্গেলা মের্কেলের উপর গোপন নজরদারীকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই মার্কিন-জার্মান সম্পর্কে অস্থিরতা বিরাজ করছিলো। এর মধ্যেই আজ যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসে এ-ঘটনার কথা প্রচারিত হচ্ছে, যদিও সন্দেহিত চরকে আটক করা হয়েছে গত পরশু।
নাম অপ্রকাশিত জার্মান সরকারী কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থাগুলো জানাচ্ছে, গ্রেফতারিত জার্মান গোয়েন্দা সংস্থার কর্মী মূলতঃ ডবল এজেণ্ট হিসেবে মার্কিন গোয়েন্দাসংস্থা এনএসএ'র নজরদারী নিয়ে জার্মান সংসদীয় তদন্তের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করে যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছিলেন। উল্লেখ্য, এক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মী যখন কর্তৃপক্ষের অগোচরে ভিনদেশী গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষে কাজ করেন, তখন তাঁকে বলা হয় 'ডবল এজেণ্ট' বা দ্বৈতচর বলা হয়।
আজ সন্দেহিত এই ডবল এজেণ্টের ব্যাপার ব্যাখ্যা দাবী করে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে জার্মান কর্তৃপক্ষ। চ্যান্সেলার মের্কেলের একজন মুখপাত্র বলেছেন, "বিদেশীদের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তিকে আমরা হালকাভাবে নিই না।"
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল বা এনএসএ সমগ্র পৃথিবীতে বিশাল আকারের নজরদারির জাল বিস্তার করে রেখেছে। সংস্থাটির একজন প্রাক্তন কর্মী এডোয়ার্ড স্নৌডেন এ-ব্যাপারটি সইতে না পেরে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ফাঁস করে দিয়েছেন এ-সংক্রান্ত অতি গোপন বিভিন্ন প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য। পলাতক স্নৌডেন অবশেষে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন রাশিয়ায়।
ইণ্টারনেটে আন্তঃমহাদেশীয় তথ্য-প্রবাহের জন্য ব্যবহৃত হয় সাবমেরিন কেবল। মার্কিন এনএসএ ও ব্রিটেইনের তূল্য সংস্থা জিসিএইচকিউ মিলে বিশ্বের প্রায় সমস্ত ডিজিট্যাল তথ্যের উপর নজরদারী করে। এর অন্তর্ভূক্ত রয়েছে ইমেইল, ফেইসবুক-ট্যুইটার-সহ সামাজিক মাধ্যম, ব্লগ, চ্যাট, ই-কমার্স, ই-ব্যাঙ্কিং, টেলিফৌন কল, মোবাইলের এসএমএস ইত্যাদি।
এনএসএ'র কর্মকাণ্ডের কথা স্নৌডেনের বরাতে উন্মোচিত হওয়ার পর নজরদারীর ব্যাপারে সংবেদনশীল জার্মানী 'নজরদারী না-করার চুক্তি' করতে যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দেয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনও তাতে সম্মত হয়নি। এ-পরিস্থিতিতে গতমাসে ভেরিজ়োন নামের একটি বিরাট একটি মার্কিন টেলিযোগাযোগ কোম্পনির সাথে থাকা চুক্তি বাতিল করে জার্মান কর্তৃপক্ষ।
স্নৌডেনের উন্মোচিত দলিলাদি থেকে দেখা গিয়েছে পৃথিবীর প্রতিটি দেশের উপর নজরদারী করে যুক্তরাষ্ট্র শুধুমাত্র ৪টি ইংরেজীভাষী দেশ বাদে। এগুলো হচ্ছে, ব্রিটেইন, ক্যানাডা, অস্ট্রেলয়া ও নিউজিল্যাণ্ড। সম্মিলিতভাবে এ-পাঁচটি ঘনিষ্ট দেশ ফাইভ আইজ় নামে পরিচিত।
আপনার মন্তব্য
সম্পর্কিত অন্যান্য
- আটলাণ্টিক ঝড় জাভিয়ারের আঘাতে বিপর্যস্ত উত্তর ইউরোপের জীবনযাত্রা
- ইরানের সাথে পরমাণু-প্রকল্প নিয়ে আলোচনাঃ ছাড় দিতে রাজি ছয় পরাশক্তি
- ব্রিটেইন ও জার্মানীর গোয়েন্দারা কাজ করছেন সিরিয়ার আল-কায়েদা বিদ্রোহীদের পক্ষে
- গ্রীসে পুনরায় নির্বাচনের সম্ভবনাঃ এড়াতে প্রচণ্ড চাপ বিদেশী ঋণ-দাতাদের
- নোবেল-জয়ী গুন্টার গ্রাসের কবিতাঃ ইরান নয় ইসরায়েলই বিশ্ব-নিরাপত্তার প্রতি হুমকি