সংবাদ পরিক্রমা
- তুর্কী সরকারী সেনাদের উপর কুর্দী বিদ্রোহীদের বড়ো আঘাতঃ কমপক্ষে ২৬ প্রাণহানি
ইউকেবেঙ্গলি - ১৯ অক্টোবর ২০১১, বুধবারঃ পৃথক কুর্দী রাষ্ট্রের দাবীতে সংগ্রামরত কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) গেরিলাদের হামলায় তুরস্কের অন্ততঃ ২৬ জন সরকারী সেনার প্রাণহানি ঘটেছে আজ বুধবার। ইরাক সীমান্ত-সংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের হাক্কারি অঞ্চলের সুকুরযাতে এ-হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা ১৯৯৩ সালের পর থেকে সবচেয়ে বড়ো একক আক্রমণ মনে করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে কুর্দী গেরিলারা তুর্কী সরকারী সৈন্য ও স্থাপনার উপরে আক্রমণ আক্রমণ বৃদ্ধি করেছে। গত জুলাই মাস থেকে তাঁদের হাতে এ-পর্যন্ত প্রায় ৫০ তুর্কী সামরিক-সদস্যের প্রাণ-হানি ঘটেছে। ঘটনার পর-পর প্রধানমন্ত্রী তায়িপ এরদোগান তাঁর পূর্ব-নির্ধারিত কাজাখস্তান সফর বাতিল করেছেন।
তুরস্ক এ-হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ গুল হামলাকারীদেরকে উপযুক্ত শাস্তি দেয়ার প্রতিজ্ঞা করেছেন। তাঁর অংশ হিসেবে তুরস্কের বিমানবাহিনী ইতোমধ্যেই বিদ্রোহীদের ঘাঁটি বলে কথিত উত্তর-ইরাকের কয়েকটি এলাকায় বোমা-হামলা করেছে। পুলিস তুরস্করের অভ্যন্তরে অবস্থানকারী বিদ্রোহীদেরকে ধরতে তথ্য-সংগ্রহের চেষ্টায় তাঁদের প্রতি সহমর্মী কুর্দীদের হেনস্তা করছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। উল্লেখ্যঃ গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট গুল সেনাবাহিনীর মনোবল চাঙ্গা করার লক্ষ্যে বিদ্রোহ-উপদ্রুত অঞ্চলগুলো সফর করেন। গত অগাস্ট মাসে বিদ্রোহ দমনে তুর্কী বিমানবাহিনী ইরাক-সীমান্ত অতিক্রম করে বোমা-হামলা করে প্রায় ১৬০ জন বিদ্রোহী যোদ্ধাকে হত্যা করে।
স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবীতে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি ১৯৮৪ সালে স্বশস্ত্র যুদ্ধ শুরু করে। ১৯৯৯ সালে তাঁদের নেতা আব্দুল্লাহ ওযালান গ্রেফতারিত হন এবং তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। পরে এ-শাস্তি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যতার শর্তের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণে মৃত্যুদণ্ড থেকে অব্যাহতি দিয়ে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। প্রায় তিন-দশক ধরে চলা এ-বিদ্রোহে এ-পর্যন্ত প্রায় ৪০,০০০ প্রাণহানি ঘটেছে, যার মধ্যে অন্ততঃ ৩২,০০০ পিকেকে'র সদস্য। অতীতে সিরিয়া, ইরান, গ্রীস, সাইপ্রাস, প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন, ও যুক্তরাজ্য-সহ পশ্চিম ইউরোপের অনেক দেশ তাদেরকে অর্থ, অস্ত্র, গোলাবারুদ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করেছে।