সংবাদ পরিক্রমা
- দক্ষিণ সুদানে পূর্ণ মাত্রার গৃহযুদ্ধের আশঙ্কাঃ যুক্তরাষ্ট্রের সেনা মোতায়েন
ইউকেবেঙ্গলি - ২৩ ডিসেম্বর ২০১৩, সোমবারঃ ২০১১ সালে স্বাধীনতা-প্রাপ্ত দক্ষিণ সুদানে সপ্তাব্যপী সংঘর্ষ চলছে জাতীয় সেনাবাহিনীর দুই অংশের মধ্যে। 'দূতাবাসের নিরাপত্তা ও মার্কিন নাগরিকদেরকে নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে' যুক্তরাষ্ট্র প্রায় একশো সেনা মোতায়েন করেছে, যদিও দেশটিতে জাতিসঙ্ঘের প্রায় ৭,০০০ শান্তিরক্ষী সেনা অবস্থান করছে।
দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধের পর তেলসমৃদ্ধ দক্ষিণ সুদান মূল সুদান থেকে আলাদ হয়ে নতুন রাষ্ট্র গঠন করে এক গণভোটের মাধ্যমে। তবে স্বাধীনতা এলেও স্থিতিশীলতা আসেনি এখনও মধ্য আফ্রিকার এ-দেশটিতে। জাতিগত অস্থিরতা, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও রাজনৈতিক ক্ষমতার দ্বন্দ্বে শুরু থেকেই এখানে চলছে সহিংসতা। দেশটির ১০ প্রদেশের অন্ততঃ ৯টিতে এ-মুহুর্তে চলছে কোনো না কোনো ধরণের সংঘাত।
১৪ ডিসেম্বর সেনাবাহিনীতে বিদ্রোহ দেখা দেয়। এই সেনা-অভ্যুত্থ্যানের পেছনে জুন মাসে পদচ্যুত সাবেক উপ-প্রেসিডেণ্ট রিক মাচারের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ করে সরকার। তবে মাচার সে-অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে জানান, এ-ঘটনা সম্বন্ধে তিনি আগে থেকে কিছুই জানতেন না। ১৬ তারিখে প্রেসিডেণ্ট সালভা কীর সামরিক পোশাক পরিহিত হয়ে টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে দেশবাসীকে জানান যে, 'বিদ্রোহ দমন করা হয়েছে'।
কিন্তু বাস্তবে বিদ্রোহ তখন আরও নতুন শক্তি অর্জন করেছে। ১৯ তারিখে বিদ্রোহীরা দখল করে দেশটির কেন্দ্রস্থিত জংলেই প্রদেশের রাজধানী বোর নগরী। ২২ তারিখে মাচার আল-জাজিরাকে বলেন, তাঁর অনুগত সেনারা উত্তরাঞ্চলীয় বেন্তিউ শহরের নিয়ন্ত্রণ কব্জা করেছে। ২১ তারিখে বিদ্রোহীদের গুলিতে যুক্তরাষ্ট্রের দু'টো বিমান ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে অন্ততঃ ৩ জন সেনা আহত হয়। এ-পরিস্থিতিতে প্রেসিডেণ্ট ওবামা বলেছেন, প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্রের আফ্রিকা কম্যাণ্ড প্রয়োজনের মুহূর্তে যেনো দ্রুত যুদ্ধে নিযুক্ত হতে পারে সে-প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান কর্ণেল স্টীভ ওয়ারেন।
দৃশ্যতঃ ডিঙ্কা ও নুয়ের এ-দুই নৃ-জনগোষ্ঠীর বৈরিতাকে কেন্দ্র করে চলছে এ-সংঘাত। ইতোমধ্যে হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সাংবাদিক হান্নাহ ম্যাকনীশের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, 'হত্যা, ধর্ষণ ও হাত-পা বেঁধে শিশুদের গুলি করা হচ্ছে দক্ষিণ সুদানে'।
#Nuer people sheltering in a UN compound told @HannahMcNeish about executions, rape, children tied up and shot in South Sudan #BBCNewsday
— BBC Africa (@BBCAfrica) December 23, 2013
এদিকে বিরোধী-নেতা প্রাক্তন উপ-প্রেসিডেণ্ট নুয়ের জাতির রিক মাচার ট্যুইটারের মাধ্যমে প্রেসিডেণ্ট কীরের বিদায় দাবী করেছেন।
I don't wish for civil war to happen again in South Sudan. Salva Kiir must leave and this will bring democracy and freedom to South Sudanese
— Dr Riek Machar Teny (@Drriekmachar) December 22, 2013
ডিংকা সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত প্রেসিডেণ্ট কীরের বেসামরিক পোশাক বদলে পূর্ণ সামরিক পোশাকে টেলিভিশনে হাজির হওয়াকে বিশ্লেষকরা তাঁর অনমনীয়তার লক্ষণ হিসেবে দেখছেন। তবে আজ যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত ডৌন্যাল্ড বূথ তাঁর সাথে দেখা করতে এলে তিনি জানান, কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই তিনি রীক মাচারের সাথে আলোচনায় সম্মত আছেন।
জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুন দক্ষিণ সুদানের নেতৃবৃন্দকে চলমান সংঘাতের একটি রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে আহবান জানিয়েছেন।
আপনার মন্তব্য
সম্পর্কিত অন্যান্য
- সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসে রুশ-মার্কিন সমঝোতাঃ আপাতত হামলা নয়
- যুক্তরাষ্ট্রকে পুতিনের হুঁশিয়ারিঃ জাতিসঙ্ঘকে এড়িয়ে সিরিয়ায় হামলাকে 'আগ্রাসন' গণ্য করবে রাশিয়া
- সিরিয়ার সরকার উৎখাতে জিহাদীদেরকে সরাসরি অস্ত্র দিবে যুক্তরাষ্ট্রঃ নৌ-ফ্লাই-জৌন আরোপের সম্ভাবনা
- সিরিয়া গৃহযুদ্ধঃ ব্রিটেইন-ফ্রান্স-যুক্তরাষ্ট্রের মুখোমুখি রাশিয়া
- সিরিয়া গৃহযুদ্ধঃ জাতিসঙ্ঘ বলছে বিদ্রোহীরা যুদ্ধাপরাধী, যুক্তরাষ্ট্র চায় নতুন বিদ্রোহী-নেতৃত্ব