সংবাদ পরিক্রমা
- সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র সমর্পন সম্পন্নঃ বিদ্রোহীদেরকে ৫০ কোটি ডলার দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র
ইউকেবেঙ্গলি - ২৬ জুন ২০১৪, বৃহস্পতিবারঃ ঘোষিত রাসায়নিক অস্ত্রের শেষ মজুদটুকু আন্তর্জাতিক রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধি সংস্থা ওপিডসিব্লিউ'র হাতে তুলে দিয়েছে সিরিয়া। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে মার্কিন বিমান-হামলার হুমকীর মুখে রাশিয়ার কুটনৈতক হস্তক্ষেপে রাসায়নিক অস্ত্র ত্যাগে সম্মত হয় গৃহযুদ্ধ-কবলিত দেশটি।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ওপিসিডব্লিউর মহাপরিচালক আহমেত উজ়ুমসু সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র সমর্পন সম্পন্ন হওয়ার ঘোষণা দেন। কয়েকবার বিঘ্ন ঘটলেও টানা ৯ মাস অন্ততঃ ৩০টি রাষ্ট্র ও জাতিসঙ্ঘের সহযোগিতায় ১,৩০০ টন অস্ত্র-মজুদ সরানোর কাজ শেষ পর্যন্ত সমাপ্ত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ এমভি কেপ রে নামক একটি মার্কিন জাহাজে তোলা হয়েছে। এর বড়ো অংশ ঐ জাহাজেই ধ্বংস করা হবে ভূমধ্য সাগরে কোনও একটি গোপন স্থানে। অবশিষ্ট রাসায়নিক অস্ত্র ব্রিটেইন, ফিনল্যাণ্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে ধ্বংস করা হবে।এদিকে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে সরকারবিরোধী দলগুলোর মধ্যে তুলনামূককভাবে কম জঙ্গিদেরকে নতুন করে ৫০ কোটি ডলার দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেণ্ট বারাক ওবামা আজ মার্কিন কংগ্রেসকে এ-অর্থ ছাড়ের অনুরোধ করেছেন। প্রধানতঃ সুন্নী জিহাদীদের নেতৃত্বে সরকার উৎখাতের যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় থেকেই এর পিছনে যুক্তরাষ্ট্র-সহ পশ্চিমা শক্তিগুলোর মদদের অভিযোগ করে আসছিলো সিরিয়ার শিয়া প্রেসিডেণ্ট বাশার আল-আসাদের সরকার।
সিরিয়ার বিদ্রোহীদের মধ্যে আল-কায়েদার সহ-সংগঠন আল-নুসরা ফ্রণ্ট ও ইসলামিক স্টেইট অফ ইরাক এ্যাণ্ড লেভাণ্ট (আইসিস) যুদ্ধের ময়দানে সবচেয়ে শক্তিশালী বলে মনে করা হয়। বহুধাবিভক্ত বিদ্রোহী জোটের মধ্যে তুলনামূলকভাবে কম চরমপন্থী দলগুলোর স্থানীর সমর্থন ব্যাপকভাবে কম। সুন্নী জিহাদীরা মূলতঃ শিয়া-সুন্নী সংঘাতের ইতিহাস ও সিরিয়ার রাষ্ট্রক্ষমতার বিন্যাসে শিয়াদের আধিপত্যকে ব্যাপারটি ব্যবহার করে সুন্নী জনগোষ্ঠীর সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা চালায়।
চরমপন্থী ইসলামবাদীরা রয়েছে জেনেও রাশিয়ার সাথে ঘনিষ্ট আল-আসাদকে উৎখাতে বিদ্রোহীদেরকে অর্থ, অস্ত্র, প্রশিক্ষন ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গোপন ও প্রকাশ্য সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেইন, ফ্রান্স ইত্যাদি দেশ। যদিও এক সময় আল-নুসরা ফ্রণ্টকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু ততোদিনে সিরিয়ার বিরাট অংশ বিদ্রোহীদের দখলে চলে গিয়েছে। সম্প্রতি ইরাকে বিপুল সুন্নী অধ্যুষিত এলাকা দখল করা আইসিস ইতোমধ্যে উত্তর সিরিয়ার বৃহৎ একটি অংশ নিয়ন্ত্রন করছে।
হোয়াইট হাউস বলছে, নতুন অর্থবরাদ্দের মাধ্যমে মধ্যপন্থী বিরোধীদেরকে শক্তিশালী করবে। এ-সহায়তা আইসিসের মতো ইসলামী চরমপন্থী দলগুলোকেও মোকাবেলা করবে বলে দাবি করছে যুক্তরাষ্ট্র। গতমাসে ওয়েস্ট পয়েণ্টে এক সামরিক এ্যাকাডেমিতে দেয়া এক বক্তৃতায় প্রেসিডেণ্ট ওবামা সিরিয়ার বিদ্রোহীদের প্রতি সহায়তা বর্ধনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
আপনার মন্তব্য
সম্পর্কিত অন্যান্য
- সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসে রুশ-মার্কিন সমঝোতাঃ আপাতত হামলা নয়
- সিরিয়ায় সন্দেহিত রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারঃ সরকারকে দোষ দিয়ে আক্রমণে প্রস্তুত ব্রিটেইন-যুক্তরাষ্ট্র
- সিরীয় বিদ্রোহীদের মধ্যে ইসলামবাদীদের আধিপত্যঃ মার্কিন ও ব্রিটিশ সহায়তা বন্ধের ঘোষণা
- সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস-প্রক্রিয়া শুরুঃ আসাদের প্রশংসা কেরির
- রাসায়নিক অস্ত্রের তালিকা দিয়েছে সিরিয়াঃ জিনিভা শান্তি-বৈঠকে অস্ত্রবিরতি প্রস্তাবের সম্ভবনা আসাদের